স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক জীবনের চলার পথে সবচেয়ে বড় প্রভাব রাখে। এই সম্পর্কে যদি একটুও ভুল কিছু থাকে, তাহলে তা শেষ পর্যন্ত বিচ্ছেদে গড়াতে পারে। পারস্পরিক বোঝাপড়ার অভাব থাকলে উভয়দিক থেকে নেয়া সঠিক সিন্ধান্তও ভুল হিসেবে দাঁড়ায়। তখন জীবন হয়ে উঠে দুর্বিষহ এক যন্ত্রণার। বিপরীত দিকে নিজেদের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া থাকলে যে কোনো কঠিন পরিস্থিতিকে সামলে নেয়া যায় খুব সহজেই। তাই স্বামী-স্ত্রীর মানসিক দূরত্ব কমিয়ে নেয়াটা জরুরি। চলুন জেনে আসি কেমন করে এই দূরত্ব ঘোচানো যায়।
আমরা সবাই শুধু নিজেদের কথাটিই বলতে পছন্দ করি। যত অনুযোগ আর অভিযোগ সব যেন আমার একার, এমন মনোভাব নিয়ে আমরা থাকি। বিপরীত পাশের মানুষটার কথা শুনতে চাই না। এটিই সবচেয়ে বড় ভুল। এ কারণেই যার যার সমস্যা, তার তার কাছেই থেকে যায়। আসে না কোনো সমাধানের পথ। কেননা আমরা তো উপলব্ধিই করতে পারি না, একে অপরের জায়গা থেকে। তাই আপনার সঙ্গী কী বলতে চাইছে, তা মন দিয়ে শোনার অভ্যাস করুন। তার কথা মন দিয়ে শুনলেই দেখবেন জটিলতা অনেকটা কমে গিয়েছে। কথা শোনার পর যদি আপনার মতামত জানানোর থাকে, তখন কথা বলুন। কিন্তু তাকে থামিয়ে দিয়ে নিজে কথা বলতে শুরু করবেন না।
ভিন্ন জায়গা থেকেও ভাবুন
আমরা শুধুই নিজের কথা ভাবি, নিজের সমস্যাটিকেই বড় করে দেখি। কেবল একটি দৃষ্টিকোণ থেকেই ঘটনাকে দেখি। এটি অনেক বড় ভুলের জায়গা সব সম্পর্কের ক্ষেত্রেই। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলতে পারে এমন ভাবনা। এই কাজটি করবেন না। যদি আপনার কোনও কাজ সঙ্গীর অপছন্দ হয়, তখন তার কারণ খুঁজে বের করে, তার দিক থেকে দেখার চেষ্টা করুন। নিজের চাওয়া পাওয়ার জায়গাকেও ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখুন, দেখবেন কত সহজ হয়ে গেছে সবকিছু।
বিশ্বাস রাখুন
সঙ্গীর কোনও কাজ অপছন্দ হলেই আমরা রাগ করি। তার থেকে কোনও কথাই শুনতে চাই না। কিন্তু তার যে কাজে আপনার খারাপ লেগেছে, সেই কাজ করার পেছনে হয়তো কোনও কারণ রয়েছে। সঙ্গীর থেকে সেই কথাটি শুনুন। তাকে বিশ্বাসের জায়গা থেকে বোঝার চেষ্টা করা উচিত। আপনার কোনো কাজে বাধা দিলে বিশ্বাসের জায়গা থেকে ভাবতে হবে আপনার ভালোর জন্যই এই বাধা। পরিস্থিতি অনুযায়ী ভাবতে পারলেই জীবন সুন্দর। এ রকম না হলে সম্পর্কের প্রতিবন্ধকতা বাড়তেই থাকবে।
যুক্তি দিয়ে কথা বলুন
হুটহাট রেগে না গিয়ে ঠান্ডা মাথায় অনেক দিক বিশ্লেষণ করে কথা বলতে চেষ্টা করুন। এতে আপনার সঙ্গী আপনার কথার গুরুত্ব বুঝবে। আপনি যে কতটা ভেবেচিন্তে কথা বলেন এই দিকটি বুঝতে পারলে আপনার ওপর অগাধ শ্রদ্ধাবোধ তৈরি হবে। যে কোনো কথাকেই মূল্যায়ন করবে তখন। যদি তা না করে সব সময একই ধাঁচের কথা বলতে থাকেন তাহলে বীপরিত পাশের মানুষটা বুঝে নেবে, আপনার ভেতর কোনো বোধের জায়গা নেই। এতে করে পরবর্তীতে যত কথাই বলুন, সবকিছুই মূল্যহীন। সম্পর্কে জায়গাতে বড় প্রভাব ফেলে এই দিকটি।
এই কয়েকটি সাধারণ নিয়ম মেনে চললেই কিন্তু সম্পর্কে ভুল বোঝাবুঝির সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যাবে। সংসারে সুখ-শান্তির অভাব হবে না।
dh