বিয়ের কয়েক বছরের মধ্যে সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া এখন যেন ডাল-ভাত হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই সঠিক জীবনসঙ্গী নির্বাচন করা যেমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তেমনি ফুলশয্যার আগে সঙ্গীকে ৬টি প্রশ্ন না করাও হবে মারাত্মক ভুল! এই প্রশ্নগুলোর উত্তরের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে সুখী দাম্পত্যের চাবিকাঠি।
ছবি সংগৃহীত |
১. আমাকে কেন বিয়ে করলে?
এমন প্রশ্নের উত্তরে অনেকেই বলেন, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি বলে তোমার সঙ্গে জীবন কাটাতে চাই।’ কিন্তু এটাই কি সেই উত্তর যা আপনি শুনতে চাইছেন? সম্ভবত না। বরং সেই উত্তর থেকে জেনে-বুঝে নিতে হবে যে সঙ্গীর জীবনে আপনার প্রয়োজনীয়তা কতটা। কারণ, আপনার সঙ্গীর জীবনে যদি আপনার তেমন গুরুত্ব না থাকে, তাহলে এই সম্পর্ক যে বেশি দিন ঠিকবে না, তা তো বলাই বাহুল্য! তাই এই প্রশ্নের উত্তর বিশ্লেষণের মধ্যে দিয়েই আপনাকে আপনার জীবনসঙ্গীর সব মনের কথা বুঝে নিতে হবে।
২. তুমি কেন আমাকে ভালোবাস?
এটি একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। কেউ যদি এই প্রশ্নের উত্তরে বলে ‘তোমাকে ভালোবাসি, তাই ভালোবাসি’, তাহলে সেটি খুব গ্রহণযোগ্য উত্তর হল না। আপনার সঙ্গীর উত্তর থেকে বুঝে নেয়ার চেষ্টা করুন, সে আপনার সবটুকু মিলিয়ে আপনাকে ভালোবাসে কি না। শুধু আপনার ভালো নয়, আপনার খারাপ দিকগুলোকেও সে মেনে নিতে প্রস্তুত কি না, তা বুঝে নেয়া আপনার জন্য একান্ত প্রয়োজন।
৩. বিয়ের পর ভালোবাসা বাঁচিয়ে রাখার জন্য কী করবে?
এই প্রশ্নটা শুনে আপাতদৃষ্টিতে ছেলেমানুষি বলে মনে হতেই পারে। কারণ, পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রয়োজন বদলে যায়। কিন্তু এই প্রশ্নের সামনে দাঁড়িয়ে আপনার সঙ্গী যদি উত্তর দিতে ইতস্তত করেন বা বলেন যে, ‘সেসব ভবিষ্যতে দেখা যাবে’, তাহলে বুঝতে হবে আপনাদের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তিনি আদৌ ভাবেন না। সেটা কিন্তু চিরস্থায়ী সম্পর্কে যাওয়ার জন্য খুব ভালো লক্ষণ নয়।
৪. আমার জন্য জীবনে আপস করতে প্রস্তুত?
আপস করার আরেক নাম হয় বিয়ে। আপনার সঙ্গী প্রয়োজনে তেমন কিছু আপস করতে প্রস্তুত কি না, তা প্রথম দিনেই জেনে নিন। আপনার ভালোবাসার সঙ্গে তার নিজের জীবনের চাহিদার দ্বন্দ্ব দেখা দিলে কিন্তু মুশকিল। তাই সময় থাকতে থাকতে সঙ্গীর মনটা বুঝে নেয়ার চেষ্টা করুন। তিনি কোন কোন বিষয়কে গুরুত্ব দেন, কোনগুলোকে নয়, তা একবার বুঝে নিলে আপনার পক্ষে মানিয়ে নিতে একটু সুবিধা হবে।
৫. কষ্টের ভাগ নিতে প্রস্তুত?
এই প্রশ্নটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। জীবনে ওঠানামা চলতেই থাকে। তাই তিনি আপনার দুঃখ এবং কষ্টগুলোর অংশীদার হতে প্রস্তুত কি না, তা জেনে নেয়া প্রয়োজন। আপনার জীবনের অন্ধকার সময়ে তিনি যদি আপনার কষ্টের ভাগ নিতে না পারেন, তাহলে তিনি আপনার জন্য উপযুক্ত নন। তাই প্রথম দিন থেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকুন।
৬. সন্তানদের জন্য ত্যাগস্বীকার করতে প্রস্তুত?
বিবাহিত জীবনে সন্তান আরও একটি বিশাল আপসের জায়গা। আপনার সঙ্গীর মধ্যে সন্তানদের জন্য সেই আপসটুকু করার মতো মানসিকতা রয়েছে তো? সে একজন অত্যন্ত দায়িত্বপূর্ণ অভিভাবক হতে প্রস্তুত তো? এই সবকিছু বুঝে নেয়ার চেষ্টা করুন প্রথম দিনেই।
এই ৬টি প্রশ্নের মাধ্যমেই আপনি আপনার জীবনসঙ্গী সম্পর্কে ধারণা পেয়ে যাবেন। কিন্তু এই প্রশ্ন একতরফা নয়। এসব প্রশ্নের সামনে দাঁড় করান নিজেকেও। এভাবেই সম্পর্কের শুরুর দিন থেকে দুজনের মধ্যে বোঝাপড়া বাড়িয়ে তুলুন।
dh