বাংলা গল্প মায়াবতী রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প Valobashar Golpo
রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প Valobashar Golpo |
গল্পঃ মায়াবতী
জান্নাতুল ফেরদৌস সূচনা
পর্বঃ৭
নিশু মিশির সব বান্ধবী সাথে কথা বলে অবশেষে বুঝতে পারলো নুহা হচ্ছে মিশির সবচেয়ে কাছের বান্ধবী। নুহার সাথে কথা বলে অনেক রিকুয়েষ্ট করে জানতে পারলো যে মিশির কোনো বিএফ নেই। তাকে যেন কেউ প্রোপোজ না করে তাই বিএফ আছে বলে বেড়ায়। আর মিশির সম্পর্কে আরো অনেক কিছু জেনে নিলো। আর নুহাকে এসব কিছু মিশিকে বলতে না করলো।
ফাইনাল পরীক্ষার আগে কলেজ বন্ধ থাকায় মিশি এখন বাহিরে তেমন একটা বের হওয়া হয়ে ওঠে না। কোনো ফেন্ডের সাথে দেখা হয় না এখন। সবার সাথে ফেইসবুকেই টুকটাক কথা হয়। সারাদিন বাসায় থাকতে হয় তার।
আজকে খুব বোরিং লাগছে তার। অনেক দিন তো হলো নিশুর সাথে কথা হয় না। একবার কি নিশুকে মেসেজ দিয়ে দেখবে? এসব ভাবতে ভাবতে নিশুকে একটা মেসেজ দিলো।
- হাই??
মেসেজটা দেখে নিশুর নাচতে ইচ্ছে করছে। যাক অবশেষে তার অপেক্ষা শেষ হলো। তবে সে ইচ্ছে করে লেইট করে রিপ্লাই দিলো।
- কি??
- ওদিনের পর আমাকে আর মেসেজ দিলেন না যে??
- কেন দিবো??
- আমরা তো ফেন্ডস তাই না??
- না। ফেন্ডস না।
- তো কি??
- আমি তোমার সাথে প্রেম করতে চাই।
- কিহ! আমি তো ওইদিনি বলে দিছি যে আমার বিএফ আছে। তাহলে আবার এই কথা বলছেন কেন??
- আজকাল মেয়েরা একসাথে ৩/৪ টা প্রেম করে একসাথে। তুমি না হয় ২ টা প্রেম করলে।
- না। আমি আমার বিএফ কে ধোকা দিবো না।
- বিএফ কে ধোকা কোথায় দিতেছো। ওর সাথে তো তুমি প্রেম করবেই।
- না। আপনার সাথে আমি প্রেম করবো না।
- তাহলে চলো বিয়ে করে ফেলি। প্রেম করতে হবে না আমার সাথে। কি করবে আমায় বিয়ে??
- কিহ! কখনোই না।
- দেখো তোমার বিএফ প্রেম করলেও বিয়ে আমিই তোমাকে করবো।
- আমি কখনোই আপনাকে বিয়ে করবো না।
- তোমার ফিউচার হাজব্যান্ড আমি। আমার বেবির আম্মু তুমি। লাভ ইউ বউ।
-(কতো গুলো রাগের ইমোজি দিয়ে) হেইট ইউ।
এই বলে অফলাইন হয়ে যায়।
নিশু হাসতে হাসতে বলছে তোমাকে আমি মানিয়েই ছাড়বো আমার মায়াবতী
অসহ্যকর ছেলে একটা। কিন্তু কেউ আমাকে কখনো বিয়ের জন্য প্রপোজ করে নি, যারা প্রোপোজ করছে তারা প্রেম করার জন্যই প্রোপোজ করছে আমাকে। মনের ভিতর অন্যরকম একটা অনুভূতি হচ্ছে মিশির। ওফ! এসব কি ভাবছি আমি। আমি এসবে পড়তে চায় না।
ভার্সিটিতে আসার পর অভিকে দেখছে না নয়না। এমনিতে তো সব সময় তার চারপাশেই থাকে সবসময়। ক্যান্টিনে বসে আছে নয়না আর বসে বসে ভাবছে অভি কি আসে নি আজকে। হঠাৎ অভি এন্ট্রি আর সাথে একটি মেয়ে।
- হ্যালো, মিট মাই নিউ ফেন্ড অরুণি।
মেয়েটি এমনভাবে অভির গা ঘেষে দাড়িয়েছে নয়নার একদম ই ভালো লাগছে না।
বিড়বিড় করে বলতে লাগল, এমন মেয়েকে কেউ ফেন্ড বানায়। ফেন্ড না অন্যকিছু তা তো বুঝায় যাচ্ছে।
অভি নয়নাকে ডেকে বললো
- কি হলো নয়না?? কিছু বলছো না যে??
নয়না বসা থেকে ওঠে দাড়িয়ে একটু হাসি দিয়ে বলল
- হ্যালো। আমার ক্লাস আছে আমি আসি।
বলেই ক্যান্টিন থেকে চলে গেল।
অভির পাশের মেয়েটিকে একদম সহ্য হচ্ছে না নয়নার।
দোস্ত তোর ডোজ কাজে লাগছে। শুভ এমন কথায় অভি মুচকি হেসে ওঠল।
ভার্সিটি শেষে নয়না অভির জন্য ওয়েট করছে। কিন্তু অভি এখনো আসছে না। একটুপর অভি এসে বললো নয়না আজ তুমি একাই চলে যাও আমি একটু অরণিদের বাসায় যাবো। বলেই চলো গেল।
নয়না একটা রিকশা করে বাসায় চলে যায়।
বাসায় এসে তার খুব কাঁদতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু কেনো কাঁদবে সে? অভির পাশে ওই মেয়েটাকে দেখে তার এতো খারাপ ই বা কেনো লাগছে?? তবে কি সে অভি কে ভালোবেসে ফেলেছে? কিন্তু এখন তো অনেক দেরি হয়ে গেছে। কিছুই করার নেই তার।
পরদিন যখন নয়না ভার্সিটিতে যায় আবার অভি আর অরুনিকে একসাথে দেখতে পায়। নয়নার হৃদয়টা যেন জ্বলে যাচ্ছে।সে চুপচাপ ক্লাস করে চলে আসে বাসায়। আর যাবে না
সে ভার্সিটিতে কারণ সেখানে গেলে তাকে অভি আর অরুণিকে একসাথে দেখতে হবে। আর সে তাদের একসাথে দেখতে পারবে না।