বাংলা গল্প মায়াবতী রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প Romantic Valobasar Golpo Bangla Romantic Valobashar Golpo Bangla Love Story
রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প Romantic Valobasar Golpo |
গল্পঃ মায়াবতী
জান্নাতুল ফেরদৌস সূচনা
পর্বঃ৯
ঐদিনের পর থেকে নিশুর আইডিটা আর একটিভ হয়নি। মিশি যেনো এখন নিশুর জ্বালানোটাকে মিস করে। কয়েকবার মেসেজে নকও করেছে কিন্তু মেসেজ সিন হয় নি আর।
সে নিজেই নিজেকে জিজ্ঞেসা করে, আমি নিশুকে এতো মিস করছি কেন? আমি তো এটাই চেয়েছিলাম যে আমাকে যেন সে না জ্বালায়।এটাই তো হচ্ছে। তো নিজেকে এতো অপরাধী লাগছে কেন? তবে কি আমি তাকে....
না না এটা হতেই পারে না। আর সে তো সিগারেট খায় আর সিগারেট খোরদের আমি পছন্দই করতে পারি না।
সবকিছু যেন এই সিগারেটের মধ্যে এসেই শেষ হয়ে যায়।
পরদিন নয়না যখন ভার্সিটিতে যাই অভি তাকে দেখে দৌড়ে আসে তার কাছে।কিন্তু নয়না অভিকে দেখে তাড়াতাড়ি ক্লাসে ডুকে যায়। অভিকে এভাবে ইগনোর করে চলে যাওয়ার মানে বুঝলো না কিছু। শুভর কাছ থেকে কালকের সব শুনার পর অভি ভেবেছিলো নয়না ভার্সিটি এসেই তাকে জড়িয়ে ধরবে। কিন্তু এমন তো কিছু হলো না।
আজ সারাদিন নয়না অভিকে ইগনোর করে চলছে। একটিবার কথাও বলে নি তার সাথে। ভার্সিটি শেষে নয়না যখন বাসার জন্য রওনা হয় তখন অভি নয়নার কাছে গিয়ে বলে,
- কি ব্যাপার নয়না, আজকে সারাদিন তুমি একবারো কথা বলো নি, এভাবে আমাকে ইগনোর করে চলার কারণ কি?
- (ভেংচি কেটে) আমি ভিতু ছেলেদের সাথে কথা বলি না।
নয়নাকে হেচকা টান মেরে
-কিহ আমি ভিতু?
- কি করছেন পাবলিক প্লেস এটা!!
- তো আমাকে ভিতু বললা কেনো?
- যেখানে সাহস দেখানোর দরকার সেখানে না দেখিয়ে এখন এসব করে কি সাহস দেখাছেন? কই এখনো তো কেউ প্রোপোজ করলো না আমায়?
অভি হাটু ভেঙে নিচের বসে জোরে বললো
- আই লাভ ইউ, নয়না।
নয়না হাসতে হাসতে বললো,
- লাভ ইউ টু আমার পাগল।
বেশ কয়েকদিন চলে গেল, মিশির ফাইনাল এক্সাম শেষের দিকে কিন্তু এর মধ্যে নিশুর সাথে একবারো কথা হয়নি। ঐদিনের পর নিশুর আইডিটা আর একটিভ হয়নি। এই বিরহ যেন সহ্য হচ্ছে না। মনে মনে গ্রিল্টি ফিল করছে।
আজ ১৪ ই ফেব্রুয়ারী। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। সকালে ওঠেই ফোন চেক করে,ভেবে ছিল আজ হয়তো নিশু তাকে মেসেজ দিবে।
কিন্তু তেমন কিছুই হয়নি, আইডি এখনো একটিভ হয়নি, তার দেওয়া মেসেজগুলো ওই ভাবেই পড়ে আছে। মিশি খুব করে চাইছে আজ যেনো নিশু তাকে একটা মেসেজ দেয়।
সারাদিন চলে যায়, রাত ১১.৪৫ বাজে মিশি ফোন রেখে ঘুমাতে যাবে তখনি একটা মেসেজ আসলো। মেসেজ টা নিশুর। মেসেজ লিখা ছিলো
- লাস্ট বার তোমার কাছে আসলাম। তোমাকে প্রথম দেখাই ভালোবাসে ফেলেছি। ভাবি নি কাউকে প্রথম দেখেই এতো ভালোবেসে ফেলবো। এই কয়দিনে তোমাকে ভোলার অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু পারি নি।তোমাকে সব মুহূর্তেই মনে করেছি। আমি সিগারেট খাওয়াও ছেড়ে দিছি আর ঐ সব ছাড়তে রাজি আছি যা তোমার পছন্দ না, যদি তুমি একবার হ্যা বলে দাও। আর আমি তোমার মা বাবাকে রাজি করিয়েই বিয়ে করে নিয়ে যাবো যদি তুমি রাজি থাকো।
এখন তুমি বলো তুমি কি আমার মায়াবতী হতে রাজি আছো? যদি রাজি না থাকো তবে আমাকে ব্লক দিয়ে দাও,আর কখনো আসবো না তোমার কাছে।
নিশুর এমন মেসেজ দেখে মিশির কান্না চলে আসে। কেউ তার জন্য নিজেকে পরিবর্তন করতে রাজি হবে তা তার জানা ছিলো না।
সে সরাসরি বলে দিল
- হ্যা, আমি রাজি।
মিশির এমন মেসেজ দেখে নিশুর আর খুশির সীমা নেই। ইচ্ছে করছে তার মায়াবতীকে একবার জড়িয়ে ধরতে। কিন্তু তেমন আর সুযোগ নেই। তবে দুই পাশের মানুষ দুজনের চোখের পানি আজ জানান দিছে তাদের ভালোবাসা।