বাংলা গল্প মায়াবতী Romantic Golpo রোমান্টিক গল্প
বাংলা গল্প মায়াবতী Romantic Golpo রোমান্টিক গল্প |
গল্পঃ মায়াবতী
জান্নাতুল ফেরদৌস সূচনা
পর্বঃ৬
আজ অনেকদিন ধরে কথা হয় না নিশুর মিশির সাথে। বিএফ এর কথাটা বলে কি ভুল করে ফেললো মিশি। অবশ্য তার কোনো বিএফ নেই। কিন্তু ভার্চুয়াল জীবনে সে অচেনা সবাইকে বলে বেড়ায় তার বিএফ আছে, যেন তাকে কেউ ডিস্টার্ব না করে। কিন্তু কিছুদিন নিশুর সাথে কথা বলে মিশির এখন ভালোই লাগে না নিশুকে ছাড়া।
আচ্ছা কি আছে ওই ছেলের মাঝে। ওর কিছুই তো আমার ভালো লাগে না। সিগারেট খায়, ঝগড়া করে আমার সাথে, আবার নাকি অনেক গুলো প্রেম করছে।আর এখন তো আবার আমাকেই প্রোপোজ করে বসলো। দরকার নেই আমার এসব ফেন্ড এর। আসলে ভার্চুয়াল লাইফটাই ভালো না।
এসব বলে নিজের মনকে বোঝাচ্ছে মিশি।
চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছে নিশু আর অয়ন।
- বন্ধু নতুন ভাবির কি খবর??
- কোন ভাবি?? তোর কোনো নতুন ভাবি নেই।
বলেই একটা সিগারেট জ্বালালো নিশু। এই সিগারেট ই পারে এখন তার সব কষ্ট ভুলাতে।
- সে কিরে, ঐ দিন যে বললি একটা পেত্নী মেয়ের কথা?? ওর সাথে সেটিং হয় নি তোর।
- ওই পেত্নি বলতে না করছি তোকে। আর ওই মেয়ের বিএফ আছে। আমার সাথে কিচ্ছু হবে না ওই মেয়ের।
- ওর বিএফ আছে?? আগে বলে নি তোকে??
- না।
- এতোদিন কথা বলার এখন বলে বিএফ আছে।
- হুম। জানিস এই প্রথম এই মেয়েটাকে আমার খুব ভালো লেগেছে। নিজের জীবনসঙ্গী হিসেবে একে চেয়েছিলাম। যদি প্রোপজ একসেপ্ট করতো তো অনেক ভালোবাসতাম। একেই আমার বউ করে আনতাম। কিন্তু সব ভেসতে গেল। বলে আমার বিএফ আছে( ভেংচি কেটে)।
- ভাই এতো গুলো প্রেম করে কিছু এক্সপেরিয়েন্স নিতে পারলি না?? কোন মেয়ের বিএফ আছে আর কোন মেয়ের বিএফ নাই তা এখনো বুজতে পারলি না?? ওই মেয়ের বিএফ থাকলে কি তোর সাথে কথা বলতো এতোদিন?? আর আজকাল তো মেয়েরা এমনি বিএফ আছে বলে থাকে যেন কেউ প্রোপজ না করে। ভালো করে খোঁজখবর নে একটু।
- ভাই তোর চরণগুলো কই দে একটু প্রনাম করি। তুই তো দেখি আমার থেকেও বেশি এক্সপেরিয়েন্স।
- আরে তোর থেকে কম প্রেম করলেও এক্সপেরিয়েন্স বেশি। হা হা
- তাই তো দেখেছি।
বন্ধু আজকে নয়নাকে প্রোপজ করেই ফেল। শুভর এমন কথাতে অভি কিছুটা চিন্তিত।
- কি হলো?? কথা বলছিছ না যে??
- ভাই, ও যদি না করে দেয় তো আমার কি হবে?? এরপর তো ও আমার চেহেরাই দেখতে চাইবে না আর??
- আরে কিছু হবে না। তুই একবার প্রোপোজ করে তো দেখ।
- অনেক টেনশনে আছি আমি।
- তুই একটা কাজ কর একটু প্রেকটিস করে নে। নয়না তো এখনো ক্যাম্পাসে আসে নি। ও আসলে প্রোপোজ করে নিস।
-হুম।
কিছুক্ষণ পর অভি নয়না আসছে রেডি তুই??
- হ্যা- না।
- কি বলতেছিছ। চল।
নয়না- হাই এভরিওয়ান??
অভি যা এখনি সঠিক সময়
- নয়না তোমাকে কিছু বলার ছিলো??
- জ্বি বলেন??
চুপ করে আছে অভি। কিছুতেই সাহস হচ্ছে না। শুভ অভির দিকে তাকিয়ে আছে। অভি বার বার ডোক গিলছে। তার হার্টবিট হাজার মাইলের বেগের গতিতে ছুটছে।
- কিছু বলবেন??
- তোমার ক্লাসে পড়ার কোনো নোটস্ লাগলে আমার কাছে চেয়ে নিও। আমি হেল্প করে দিবো।
বলেই অভি নয়নার সামনে থেকে চলে গেল।নয়না অবাক হয়ে অভির দিকে তাকিয়ে রইল। অভির পেছন পেছন শুভ ও ছুটলো।
- কিরে, কি বলার ছিলো আর কি বললি??
- নারে দোস্ত, আমার দ্বারা হবে না। এখন তো আমরা ফেন্ডস আছি পরে তাও থাকবো না।
- তুই না বললে ও জানবে কি করে যে তুই ওকে ভালোবাসিস।
- জানি না। কিন্তু আমাকে আগে সিউর হতে হবে ও কি আমাকে পছন্দ করে কিনা।
- হুম।
নিশু আর মিশির মাঝে দূরত্ব অনেক তাই কাছ থেকে মিশির সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতে পারবে না। তাই নিশু মিশির প্রোফাইল থেকে তার কিছু বান্ধবীকে রিকুয়েষ্ট দেয়। কারণ পটাতে হলে আগে বান্ধবীদের পটাতে হবে।
মিশি নিশুকে অনলাইন দেখেছে, অথচ তাকে একবারো মেসেজ দিচ্ছে না। বিএফ আছে বলছি বলে কথাই বন্ধ করে দিবে সে। আমি কি একবার মেসেজ দিবো তাকে। নাহ! কেনো দিবো সে কথা বলতে চায় না আমি কেনো বলবো। এসব ঘুরছে এখন মিশির মাথায়।