বাংলা গল্প মায়াবতী রোমান্টিক গল্প Romantic Golpo Bangla রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প romantic love story
Romantic Golpo Bangla রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প |
গল্পঃ মায়াবতী
জান্নাতুল ফেরদৌস সূচনা
পর্বঃ১০
একবছর পর...
আজ সেই দিন যখন নিশু আর মিশি দেখা করবে। তাদের নির্ধারিত জায়গায় নিশু দাঁড়িয়ে আছে। নীল একটা শার্ট পড়েছে কারণ নীল তার মায়াবতীর প্রিয় রং। কাঁধে একটা ব্যাগ,হাতে গোলাপ ফুল। তার আর সহ্য হচ্ছে না, কখন আসবে তার মায়াবতী। এই এক বছরে আজ তারা দেখা করবে, কি আনন্দই না হচ্ছে তার।
হঠাৎ পিছন থেকে কেউ ডাক দিলো,
পিছনে ফিরে নিশু অবাক!!!
পেছনে ২ টা মেয়ে কালো বোরকা পরে দাড়িয়ে আছে। এদের মধ্যে তার মায়াবতী কে সেটাই চিনবে কিভাবে। ২ টি মেয়েই দাড়িয়ে হাসছে। নিশু প্রথমে ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলেও পরে সে মিশিকে চিনে ফেলে। মিশির চোখ বলে দিছিলো যে সে তার মায়াবতী।তবুও মজা করে অপর মেয়েটির হাত ধরে ফেলে আর বলে
- তুমিই আমার মায়াবতী। চলো আমার সাথে তোমার বান্ধবীকে বলো চলে যেতে, আমরা এখন একা থাকবো।
এই বলে সে মেয়েটির হাত ধরে ২ কদম এগুতেই পেছন থেকে হেচঁকা টান দিলো নিশুকে মিশি।
- কোথায় যাচ্ছেন? মিশি আমি ও নুহা (রেগে)
এবার নিশু হা হা করে হাসতে লাগলো। আর বললো,
- আমি তো চোখ দেখেই বুজে ফেলেছিলাম কোনটা তুমি। তবুও একটু মজা করলাম তোমার মতো।
মিশি,নুহা দুজনি অবাক। এ কেমন ছেলেরে বাবা, কি ভেবেছিলাম আর কি হলো।
এবার নুহা বলে ওঠলো,
- এবার আমি যাই তাহলে? আমার কাজ শেষ।
- সেকি কোথায় যাচ্ছিছ আমাকে রেখে??
- (ভেংচি কেটে) ন্যাকা। তোমাদের মধ্যে থেকে কাবাবে হাড্ডি হওয়ার ইচ্ছা নেই। বাই।
বলেই চলে গেল নুহা।
নুহা এমন কথায় নিশু মুচকি মুচকি হাসছে নিশু
- আপনি আবার হাসছেন কেন??
- তোমার বুঝি আমার সাথে একা থাকতে ভয় লাগছে??
- (আমতা আমতা করে) নাহ! ভয় করবে কেন।
নিশুর হাতের গোলাপ গুলো বাড়িয়ে দিলো মিশির কাছে আর বললো
-ভয় নেই, তোমার অনুমতি ছাড়া তোমাকে আমি একটুও ছোয়ার চেষ্টা করবো না।
এবার মিশি কিছুটা স্বাভাবিক হলো। ফুল গুলো নিয়ে নিশুর দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। এতোক্ষণ সে নিশুকে ভালো করে খেয়াল করেনি। নিশুকে আজ খুব সুন্দর লাগছে। তার প্রিয় নীল রং শার্টটায় যেন ফুটে ওঠেছে ওর শরীরে। তার নাকের পাশের একটা ছোট তিল তার সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে।
আর অপর দিকে নিশুও মিশিকে দেখছে। সে ভেবেছিলো মিশি হয়তো সেজেগুজে আসবে।কিন্তু তেমন কিছুই না। মিশি সিম্পলভাবেই তার সামনে আসলো। বোরকা পড়েছে,আর একটু লিপ্সিটিক এতেই যেন মিশিকে মায়াবী লাগছে।
তারা একে অপের মধ্যে হারিয়ে গিয়েছে। চোখের ভাষায় কথা বলছে। হঠাৎ আশেপাশের শব্দে তাদের ঘোর কাটলো।
মিশি বলে ওঠলো
- আজ আপনাকে খুব সুন্দর লাগছে।
মিশি এমন কথা আগে কখনো বলেনি নিশুকে।আজ বলাতে কিছুটা লজ্জা পেয়ে গেলো নিশু।
ব্যাগ থেকে একটা শাড়ি আর কয়েক সেট চুড়ি বের করলো। সে জানে মিশির শাড়ি,চুড়ি খুব পছন্দ। শাড়িতে তার মায়াবতীকে অপূর্ব লাগে। মিশিকে শাড়ি আর চুড়ি দেখিয়ে নিশু বললো আমার প্রথম উপহার।
- এগুলো কেনো আবার?
- কেনো পছন্দ হয়নি তোমার?
- হ্যা, হয়েছে। কিন্তু?
- তুমি কি আমার স্তৃতি হিসেবে এগুলো নিবে না?
নিশুর আকুল অনুরোধ কিভাবে ফেলে দেয় মিশি। এবার মিশি তার ব্যাগ থেকে একটা হলুদ পাঞ্জাবি বের করলো আর বললো
- এটা আপনার জন্য। খুব সুন্দর লাগবে আপনাকে এটা পড়লে।
মিশি এমন কথায় মুচকি হাসলো নিশু। মিশি আবার বলে উঠলো
- আপনার হাতটা দেখি?
- কেন??
- দেন না?
নিশু হাতটা বাড়াতেই নিশুর আঙুলে একটা রিং পড়িয়ে দিলো।নিশু তো পুরোই অবাক এটা দেখে
- কি হলো এটা! আমি তো ভেবেছিলাম দুই পরিবার মিলে আমাদের এংগেইজম্যান্ট হবে। কিন্তু তুমি তো এখনি!
- পরে না হয় আবার করবো এংগেইজম্যান্ট আমরা। এখন এটা আমার স্তৃতি হিসেবে এখন আপনার আঙুলে থাকবে।
- ওকে আমার মায়াবতী। এই নাও এই ডায়েরিটা তোমার জন্য।
- (অবাক হয়ে) ডায়েরি দিয়ে আমি করবো?
-(মুচকি হেসে) আমাকে নিয়ে যা অভিযোগ আছে সেই সব নাহয় ডায়েরিতে লিখে রাখবে। পরে আমি সেগুলো শোধরানোর চেষ্টা করবো।
মিশি অবাক হয়ে নিশুর দিকে তাকিয়ে আছে। আর ভাবছে সত্যিই সে খুব ভাগ্যবতী, যে সে নিশুর মতো এমন একজন ভালোবাসার মানুষ পেয়েছে।
- কি হলো, লিখবে না?
নিশুর কথায় ঘোর কাটলো তার।
- হ্যা, লিখবো।
অনেকক্ষণ একসাথে দুজন কাটানোর পর এখন যাবার পালা। দুজনের আর কিছু সময় একসাথে ইচ্ছা থাকলেও দুজনকে ফিরতে হবে বাসায়। বিদায় নিয়ে চলে গেলো দুজনের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে।
সবকিছুই ঠিক চলছিল তাদের। কিন্তু হঠাৎ একটি ঘটনায় তাদের সবার জীবন পাল্টে যায়।