বাংলা গল্প মায়াবতী ভালোবাসার গল্প Bhalobashar Golpo, Valobashar Golpo, Bangla Love Story
ভালোবাসার গল্প - Bhalobashar Golpo |
গল্পঃ মায়াবতী
জান্নাতুল ফেরদৌস সূচনা
পর্বঃ১২
আজ নয়নার গায়ে হলুদ। ২ দিন পর আজ রুম থেকে বের হলো। নয়না অনেক চেষ্টা করছে তার বাবাকে বোঝানোর এমনকি তার মাকেও বলেছে কিন্তু কেউ তার কথা শুনে নি। তার একমাত্র ভরসা নিশু ভাইয়া। কিন্তু নিশু না আসায় নয়না বুঝতে পেরে গেছে নিশুকে এখনো জানানো হয়নি। খুব কান্না করছে নয়না। অভিকে ছাড়া অন্য কারো সাথে সে থাকতে পারবে না।
গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হলো। নয়নার চোখ ছলছল করছে পানিতে। আল্লাহর কাছে বারবার মিনতি করছে আল্লাহ একটা রাস্তা দেখাও। হঠাৎ করে দূরে কোনো চেনা মুখ দেখতে পায় নয়না। চোখে পানি থাকায় সব জাপসা দেখছিলো। সে চোখটা ভালো করে মুছে দেখলো সেই মানুষটা শুভ। শুভকে দেখে যেন আশার আলো দেখতে পেল সে।
শুভ আর নয়না এক এলাকার হওয়ায় শুভ এখানে আসতে পেরেছে। বিয়ের গেইট, বাড়ি সাজানো দেখে অবাক হয়েই বাসায় ডুকে। আর নয়নাকে কনে বেসে দেখে তো আরো অবাক। শুভ নয়নার কাছে এসে রেগে জিজ্ঞেসা করলো
- এসব কি নয়না?
নয়না কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বললো,
- ভাইয়া বাবা আমার আর অভির ব্যাপারটা জানতে পেরে আমাকে জোর করে বিয়ে দিচ্ছে। আমাকে ২ দিন রুমে বন্ধ করে রেখেছিলো। আর ফোনটাও নিয়ে নিয়েছে বাবা। আমি কোনোভাবেই অভির সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি। প্লিজ অভির সাথে একবার যোগাযোগ করিয়ে দিবে?
শুভ নয়নাকে সান্তনা দিয়ে বললো
- এই নাও আমার ফোন। এটা লুকিয়ে রাখো। এখন চুপচাপ বসে থাকো। সুযোগ পেলে অভির সাথে কথা বলবে।
নয়না ফোনটা শাড়ির নিচে লুকিয়ে রাখে আর অনুষ্ঠান শেষে ওয়াসরুমে যাবার নাম করে অভিকে ফোন দিয়ে সব ঘটনা বলে।
এবার অভি বললো
- চলো পালিয়ে যাই?
- পালিয়ে যাবো! কিন্তু বাবা-মা..
- দেখো পালিয়ে গেলে তোমার বাবা-মা প্রথমে একটু কষ্ট পেলেও আমি চাকরি পাওয়ার পর ঠিক মেনে নিবে। আর যদি আমরা না পালায় তবে তোমার বাবা তোমাকে অন্য কারো সাথে বিয়ে দিয়ে দিবে। তোমাকে না পেলে আমি মরে যাবো নয়না।(কান্না জড়িত কন্ঠে)
নয়নার কাছে আর কোনো রাস্তা ছিলো না। সেও অভিকে ছাড়া বাঁচতে পারবে না। অবশেষ নয়না রাজি হয়। আর তারা সব প্যান করে নেয়।
শুভর সাহায্যে নয়না বাসা থেকে পালাতে সক্ষম হয়। আর ঐ রাতেই অভি আর নয়না বিয়ে করে নেয়।
সকালে সারা বাড়িতে বিয়ের আয়োজন চলছে। মি. রহমান বিভিন্ন কাজ নিয়ে ব্যস্ত। নিশুকে তিনি কাল রাতে জানিয়েছে নয়নার বিয়ের কথা। নিশু তখনি কক্সবাজার থেকে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। নিশু আসলে নিশুর প্রশ্নের কি উত্তর দিবে, নিশুকে কিভাবে সামলাবে মি. রহমান তা নিয়ে অনেক চিন্তায় আছেন।
হঠাৎ নয়নার মায়ের চিৎকারের আওয়াজ পাওয়া যায়। মি. রহমান দৌড়ে নয়নার মায়ের কাছে যেতেই তিনি নয়নার রেখে যাওয়া চিরকুট মি. রহমানকে দেন। চিরকুট পড়ে মি. রহমান হতাশ হয়ে পড়ে। এতোক্ষণে বাড়ির সবার মধ্যে জানাজানি হয়ে গেছে বিষয়টা। বিয়ে বাড়ির মানুষ সবাই ছি ছি করছে। তার সব মান সম্মান মাটিতে মিশে গেলো। এই কষ্ট আর সহ্য না করতে পেরে মি. রহমান হার্টঅ্যাটাক করেন সাথে সাথে।
একটুপর নিশু বাসায় আসে। বাসায় এসে সব ঘটনা জানতে পেরে দৌড়ে হসপিটালে যায়। আর সেখানে গিয়ে শুনতে পারে তার বাবা....