বাংলা গল্প মায়াবতী রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প Bangla Romantic Love Story, Bangla love story
Bangla Romantic Love Story, Bangla love story |
গল্পঃ মায়াবতী
জান্নাতুল ফেরদৌস সূচনা
পর্বঃ২
রাতে নিশু শুয়ে শুয়ে মেয়েটার কথা ভাবছে।কিছুতেই মেয়েটার এমন আচরণ সে মেনে নিতে পারছে না। করবেই বা কি করে ফেইবুকে কেউ তার সাথে কখনো এমন আচরণ করে নি। নিশু তার ব্যক্তিগত জীবনে তাকে যে যেমন ভাবুক সোসাল লাইফে সে সেলিব্রিটি। অনেক ফলোয়ার তার। সিগারেট নিয়ে ছবি গুলোতে কত লাইক,কমেন্ট এসেছে তার।আর সেই ছবির জন্য তাকে নেশাখোর বলা, ইগনোর করা। একদমই মেনে নিতে পারছে না।
মনে মনে বলছে,সুন্দরী মেয়েদের দেমাগ বেশি। প্রথম দেখায় নিশু ক্রাশ খেলেও এখন সেই মেয়েকে পেত্নির মতে লাগছে।
বদলা নেওয়ার জন্য সেই মেয়ের প্রোফাইলে ঢুকে তার সব পোষ্টে হা হা রিকেক্ট দিল নিশু।
একটু পর সেই মেয়ে মেসেজ দিল
-এই নেশাখোর, আমার সব পোষ্টে আপনি হা হা রিকেক্ট দিছেন কেনো??
- দিবো একশোবার দিবো। আমাকে নেশাখোর বলা।
- আপনি নেশা করেন তো নেশাখোর ই তো ডাকবো।
- কি আমি নেশা করি?? ওই সিগারেট খাইলে কি নেশা করা হয়??
- হুম। আপনি নেশাখোর।
- ওই একদম নেশাখোর বলবে না বলে দিলাম।
- নেশাখোর ডাকবো না তো কি বলে ডাকবো??
- আমার নাম প্রোফাইলে দেওয়া আছে দেখে নাও।
- আপনার নাম ধরে আমি ডাকতে পারবো না। আর আপনাকে দেখতেও তো নেশাখোর লাগে??
- কিহ! আমাকে নেশাখোরের মতো লাগে? তোমাকেও তো পেত্নির মতো লাগে।
- কিহ! পেত্নি।
- হে, পেত্নি, পেত্নি...
- ওই একদম পেত্নি বলবেন না।
- তো কি বলবো?? তোমার প্রোফাইলের ছবি দেখে তো তোমাকে ঝগড়োটে মনে হয় তো কি ঝগড়াটো বলে ডাকবো??
- না। আমারো নাম আছে।
- কি নাম
- মিশি।
- ওহ তো পেত্নির নাম মিশি। হা হা হা।
মিশি এবার রাগে অফলাইন হয়ে যায়। অসভ্য ছেলের সাথে কথা না বলাই ভালো।
মিশি বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে। খুব আদুরে তার বাসায়। সে এবার ইন্টার ফাইনাল ইয়ারে পড়ে। এসব প্রেম ভালোবাসায় পড়তে চায় না সে। তাই এসব থেকে সে দূরে দূরেই থাকে। এ পর্যন্ত কোনো প্রেমের প্রস্তাব পাই নি তেমন না, হে অনেক প্রোপোজ পেয়েছে। তবে এসব থেকে দূরে দূরেই থাকে সে। তার সব বান্ধবীরাই প্রেম করে,, কিন্তু সে এসব থেকে অনেক দূর। তার নাকি প্রেমে এলার্জি আছে।
সামনে তার এইচ.এস.সি পরিক্ষা, এখন এটাতেই সে সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে চাই।
এদিকে নিশুও তার বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে। তার একটা বোনও আছে। বন্ধুদের কাছে সে প্লেবয়। যার অনেকগুলো এক্স থাকে তাকে প্লেবয় ই বলা যায়।
কিছুদিন আর কথা হয় না তাদের।
বিকেলে শুয়ে শুয়ে ফোন ঘাটছিল নিশু। খুব বোরিং লাগছে তার। হঠাৎ মিশির প্রোফাইলের ছবি আবার আসে তার নিউজ ফিডে।নিশুর কাছে ছবিটা যেন মিশির নামের সাথে একদম মিল খায় না।
নিশুর ধারণা মিশি নামের মেয়ে গুলো খুব মিষ্টি হয়। কিন্তু এই মেয়েকে দেখলে মনে হয় ঝগড়া করার জন্যই এর জন্ম। তা নাহলে তাকে নেশাখোর বলে। এতো সহজেই এ মেয়েকে ছাড়বো না সে।
আজ মিশির জন্মদিন। আজকের দিনটা কোনোভাবেই নষ্ট করবে না সে। ঘুম থেকে উঠেই সে ফোনটা নিল কে কে তাকে উইশ করছে দেখার জন্য।
ফোনের ডাটা অন করতেই অনেক নোটিফিকেশন আসছে। তা দেখে এক প্রকার খুশি হলো। কিন্তু যখনি সে ফেইসবুক ঢুকে যা দেখলো তা দেখেই সে এক প্রকার ভয়েই পেয়ে গেল।
ফেইসবুকে ঢুকতেই প্রথম ছবিটা ছিল একটা ভয়ংকর ভুতের ছবি। সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠে এমন ভয়ংকর ছবি দেখলে যে কেউ ই ভয় পাবেই।
মিশি ছবি দেখেই ভয় পাওয়ার সাথে সাথে খুব রাগও পেল। কারণ ছবিটা আর কেউ নয় তার নতুন শত্রু নিশুর কাজ।
নিশু তাকে এই ভয়ংকর ছবি দিয়ে উইশ করেছে আর সাথে লিখেছে
হেপি বার্থডে ঝগড়ালো শেওড়া গাছের পেত্নি।
আর কমেন্টে তাকে নিয়ে মজা করে অনেকেই কমেন্ট করেছে।
এটা দেখার পর মিশির রাগ একদমই কন্ট্রোল করতে পারছে না। তার ইচ্ছে হচ্ছে এখনি নিশুকে ঘুষি মেরে নাক ফাটিয়ে দিতে। তার চুলগুলো কেটে তাকে টাকলু বানিয়ে দিতে।
কিন্তু কি করবে আর এসব তো আর বাস্তবে করা সম্ভব।
সে সাথে সাথে পোষ্টটা ডিলেট করে দিল।
এসব অসভ্য ছেলেকে তার ফেন্ডলিস্টই রাখবে না সে। এই বলে সে নিশুকে ব্লক দিতে যাবে,তখনি ভাবলো এত সহজেই সে ছেলেকে ছেড়ে দেবে। তখন সে নিশুর নিকনেইম দিলো নেশাখোর।
একটু পর যখন নিশু অনলাইন হলো নিকনেইমের নোটিফিকেশন টা দেখেই সে রেগে ফায়ার।
নেশাখোর কথাটা যেন একদমই সহ্য করতে পারে না সে।
-এই মেয়ে এই। তোমার সাহস তো কম না তুমি আমার নিকনেইম নেশাখোর লিখছো কেন??
বলেই নিকনেইম ক্লেয়ার করে দিল।
- আপনি আমার প্রোফাইলে এমন ভয়ংকর পোষ্ট করার সাহস কোথায় পান??
আবার নিকনেইম দিলো
- তোমাকে বার্থডে উইশ করছি। আর পেত্নিকে তো এভাবেই বার্থডে উইশ করতে হয়।
আবার নিকনেইম ক্লেয়ার করল নিশু।
এবার নিশু মিশির নিকনেইম দিল ঝগড়োটে পেত্নি।
-আপনি আমার বার্থডেটা নষ্ট করে দিছেন।সকাল সকাল এমন ভুতের ছবি দেখে আমার দিনটাই খারাপ গেছে।
শুধুমাত্র আপনার এই পোষ্টের জন্য আমার ফেন্ডরাও আমাকে নিয়ে ফান করছে। এখন তারাও আমাকে পেত্নি ডাকছে।
এটা শুনে নিশুর একটু খারাপ লাগলো।কারো জন্মদিন সে নষ্ট করতে চাইনি। এমন করা একদমই উচিত হয়নি তার। ঝগড়াটা ইনবক্সেই রাখা ভালো ছিলো।কিন্তু ক্ষমা সে চাইবে না। তাকে নেশাখোর বলার শাস্তি এটা।
- তোমার ফেন্ডরা এতোদিন তুমি যে পেত্নি সেটা বুঝতে পারে নি।এখন আমার জন্য তারা জেনে গেছে। তার জন্য তো তোমাকে আমায় ধন্যবাদ দেওয়া দরকার।
- ধন্যবাদ দিবো আপনাকে... ইচ্ছে করছে বারি দিয়ে মাথাটা ফাটিয়ে দেয় আপনার।
-হা হা। তুমি আমাকে পাবে কোথায় পেত্নি।আর তোমার ছবি দেখলেই বুঝা যায় তুমি রক্তচোষা প্রাণী।
- ওই একদম এইসব বলবেন না। আর প্রোফাইলের ছবিটা আমার না।
মেসেজ টা দেখেই নিশু অবাক হয়ে যায়।যেই মেয়ের উপর ক্রাশ খেয়ে তাকে পরে পেত্নি বলেছিল,এখন সেটা তার ছবিই না।
Next Part
ভুল-ত্রুটি মাফযোগ্য।