বাংলা গল্প মায়াবতী Bangla Love Story রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প Love Story Bangla Valobashar Golpo Bangla Romantic Golpo Bangla Romantic Love Story
Bangla Love Story রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প |
গল্পঃ মায়াবতী
জান্নাতুল ফেরদৌস সূচনা
পর্বঃ৮
অনলাইনে মিশির যেতেই ইচ্ছে হয় না নিশুর জন্য। অনলাইন হলেই তাকে বউ বউ লিখে মেসেজ শুরু করে। ভালো লাগে না একদম তার। একদিন রাগের মাথায় বলে ফেলে
- আপনার সমস্যাটা কি? আমি আপনাকে ভালো না বাসলে আপনি কি তা জোর করে বাসাবেন। কতো বার বলছি যে আমার বিএফ আছে। মানতে পারেন না সেটা। সামনে আমার ফাইনাল এক্সাম আর আপনার জন্য অনলাইনেই আসতে ইচ্ছে করে না। আমরা ফেন্ডসরা মিলে অনলাইনে পড়াশুনা নিয়ে কথা বলি, এর মধ্যে আপনার এসব মেসেজ, যা আমার দেখতেই ইচ্ছা হয় না।
এবার নিশু কিছুটা সিরিয়াস হয়,
- দেখো আমি জানি তোমার কোনো বিএফ নেই। তোমার বান্ধবী নুহার কাছ থেকে আমি তোমার বিষয়ে জেনেছি। যেদিন তোমার প্রথম ছবি দেখি তখনি আমি ভালোবেসে ফেলি তোমাকে। আমি অনেক মেয়ের সাথে প্রেম করেছি, কিন্তু কখনো কাউকে দেখে এইরকম অনুভব করিনি যা তোমাকে দেখার পর করেছি। তোমাকে আমার জীবনসঙ্গিণী হিসেবে দেখতে চাই। জানি না তুমি কেন আমায় পছন্দ করো না কিন্তু এতোটুকু বলতে চাই আমি তোমাকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছি।
কথাগুলো দেখে একদম স্তদ্ধ হয়ে গেল মিশি। নুহার কাছ থেকে সে আমার সম্পর্কে সব জেনে নিয়েছে আর নুহা আমাকে এসব কিছুই বললো না। শুধু পাই একবার নুহাকে বুঝাবো তখন মনে মনে বলতে লাগলো এসব।
মেসেজের শব্দে ঘোর কাটলো তার।
- হ্যা আমার বিএফ নেই। বিএফ আছে বলি যেন ছেলেরা আমায় প্রোপোজ না করে। আর আমি আমার বাবা মায়ের পছন্দের মানুষকে বিয়ে করবো,তাই আমি এসব প্রেম টেম থেকে দূরে থাকি। আর আপনাকে পছন্দের কথা বলছেন, আপনার সিগারেট খাওয়াটাই তো যথেষ্ট আপনাকে অপছন্দ করার জন্য। আপনার সাথে কিছু হবে না আমার। আমাকে আর মেসেজ দিয়ে জ্বলাবেন না।
মেসেজটা দেখে নিশু মনে আঁচড় কাটলো।
- ওকে, আর তোমাকে মেসেজ দিয়ে বিরক্ত করবো না।
বলেই অফলাইন হয়ে গেল নিশু।
আজ ৩/৪ দিন হয়ে যাচ্ছে নয়না ভার্সিটিতে আসছে না। অভি অনেক চিন্তায় পড়ে গেল কি হলো নয়নার? নয়নার খোজ নেওয়ার জন্য অভি শুভকে পাঠায় তাদের খোজ নিতে। শুভ নয়নার বাসায় গিয়ে নয়নার সাথে দেখা করে।এই ৩/৪ দিনে যেন মেয়েটা শুকিয়ে গেছে। মুখে হাসি নেই তার, মুমূর্ষু রোগীর মতো দেখা যাচ্ছে নয়নাকে।
- কি ব্যাপার নয়না এই ৩/৪ দিনে নিজের একি অবস্হা করেছো? আর ভার্সিটিতে যাও না কেন?
- (একটু হাসার চেষ্টা করে) এমনি যাই না, ভালো লাগে না যেতে।
- সেকি, সামনে তোমার ফাইনাল এক্সাম আসছে আর তুমি ভার্সিটিতে এখন যাচ্ছো না। আর ওদিকে তো অভি তোমার টেনশনে পাগল হয়ে যাচ্ছে।
- অভি আমার জন্য টেনসন করছে কেন? আর ওর গার্লফেন্ড অরুণি কই?
-(মুচকি হেসে) অরুণি যে অভির গার্লফ্রেন্ড এটা তোমাকে কে বলেছে??
- কে বলবে, তাদের একসঙ্গে চলাফেরা দেখলেই বুঝা যায়। অরুণি যেভাবে অভির গা গেষে থাকে। আর এসব দেখতে পারি না বলেই তো আমি ভার্সিটিতে........
( কথাটা মুখ ফসকে নয়নার মুখ থেকে বেরিয়ে যায়)
শুভ ভ্রু কুচকে জিজ্ঞাসা করে নয়নাকে
- কিহ এই কারণ তাহলে না যাওয়ার? তুমি কি ভালোবাসো অভিকে ?
নয়না মাথা নিচু করে জবাব দেয়
- হ্যা।
এবার শুভ হো হো করে হাসতে থাকে।শুভ এমন হাসি দেখে নয়না ভ্যাবাচেকা খেয়ে যায়। শুভর এমন হাসির কারণ সে খুজে পায় না। সে এই হাসির কারণ খুজে পাচ্ছে না।
হাসি থামিয়ে নয়নাকে শুভ বললো,
- ওই, গাধাটা তোমাকে প্রথম দিন দেখেই ভালোবেসে ফেলছিল। তোমাকে এই কথাটা বলার জন্য অনেক চেষ্টা করেছে অভি। ওই নোটস এর কথা বলছিলো না তখন তোমাকে প্রোপোজ করার কথা ছিল। তুমি তাকে একসেপ্ট করবে না এই ভয়ে সে তোমাকে প্রোপোজ করতে পারে নি। তুমিও কি অভিকে সত্যি ভালোবাসো কিনা সেটা দেখার জন্য অরুণির সাথে বন্ধুত্বের অভিনয় করার আইডিয়াটা আমিই দিয়েছিলাম অভিকে। আর তুমি কিনা তাদের একসাথে দেখতে পারবে না বলে ঘরে এসে বসে আছো। হা হা।
শুভর এসব কথা নয়না একদম থ মেরে রইলো। আর অভি যে এতো ভিতু টাইপের ছেলে সেটা অভিকে দেখলে একদম ই বুঝা যায় না। তবে শুভর মুখে এসব কথা শুনে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে। হৃদয়ের কষ্টটা যেন এখন হালকা গেছে।
-কি হলো কিছু বলছো না যে, কোথায় হারিয়ে গেলে?
শুভর এমন কোথায় হুস ফিরলো।
- না কিছু না।
- তো আমি গিয়ে ঐ গাধাটাকে বলি যে তুমিও ওকে ভালোবাসো। খুশি তে পাগল হয়ে যাবে আমার বন্ধুটা।
শুভর এমন কথায় নয়নার লজ্জায় মুখ লাল নীল হয়ে যাচ্ছে। সে তাড়াতাড়ি শুভকে বিদায় দিয়ে দিলো আর রুমে এসে বসে ভাবতে লাগলো অভিকে কিভাবে শায়েস্তা করা যায়।